যৌনকর্মীদের জন্য সামাজিক সুরক্ষা, মাতৃত্বকালীন ছুটি –

Sex Workers: যৌনকর্মীদের জন্য সামাজিক সুরক্ষা, মাতৃত্বকালীন ছুটি – বেলজিয়াম সরকারের বেনজির পদক্ষেপ
People’s Reporter: যৌনকর্মীদের সামাজিক সুরক্ষার দাবিতে বহুদিন ধরেই আন্দোলন চলছে। বিশেষ করে করোনা অতিমারির সময় এই পেশায় জীবিকা নিয়ে অনিশ্চিয়তা তৈরি হয়। সেই সময় থেকে এই আন্দোলন আরও জোরাল হয়।
Sex Workers: যৌনকর্মীদের জন্য সামাজিক সুরক্ষা, মাতৃত্বকালীন ছুটি – বেলজিয়াম সরকারের বেনজির পদক্ষেপ

বিশ্বে প্রথম দেশ হিসেবে যৌনকর্মীদের জন্য বেনজির পদক্ষেপ নিল বেলজিয়াম সরকার। জানা গেছে, সে দেশের সরকার যৌনকর্মীদের মাতৃত্বকালীন ছুটি, পেনশন, স্বাস্থ্য বিমা এবং অসুস্থতাজনিত ছুটির মতো সুবিধা প্রদান করছে। ২০২২ সালে বেলজিয়ামে যৌনকর্মীদের বৈধ ঘোষণার পর এই আইনটি তৈরি হয়েছে। কর্মক্ষেত্রে যৌনকর্মীদের বৈষম্য দূর করতে এবং তাঁদের অধিকার সুরক্ষিত করতে এই পদক্ষেপ নিয়েছে বেলজিয়াম সরকার।

যৌনকর্মীদের সামাজিক সুরক্ষার দাবিতে বহুদিন ধরেই আন্দোলন চলছে। বিশেষ করে করোনা অতিমারির সময় এই জীবিকা নিয়ে অনিশ্চিয়তা তৈরি হয়। সেই সময় থেকে এই আন্দোলন আরও জোরালো হয়। অবশেষে ২০২২ সালে যৌনকর্মকে বৈধ ঘোষণা করে আইন প্রণয়ন করে বেলজিয়াম সরকার। এই নয়া আইনে কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তা এবং আইনি সুরক্ষার সুবিধা নিতে পারবেন কর্মীরা। এছাড়া কর্মসংস্থানের শংসাপত্রের মাধ্যমে তাঁরা স্বাস্থ্যবিমাও নিতে পারবেন।

আইনে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, যৌনকর্মীদের কাজের অধিকার অক্ষুণ্ণ রাখতে এবং তাঁদের সুরক্ষা বাড়াতে ‘প্যানিক বাটন’ চালু করা হচ্ছে। যা প্রয়োজনে তাঁরা ব্যবহার করতে পারবে। এছাড়া এই আইনে যৌনকর্মীদের গ্রাহকদের ‘না’ বলার অধিকারও নিশ্চিত করা হয়েছে। আইনে আরও বলা হয়েছে, অপরাধমূলক রেকর্ড থাকা নিয়োগকর্তারা যৌনকর্মীদের নিয়োগ করতে পারবেন না।

এই নতুন আইন প্রণয়নের ফলে যৌনকর্মীদের সুরক্ষার নতুন দিক খুলে গেছে বলে মত বিভিন্ন মহলের। সোফি নামক এক যৌনকর্মী জানান, ‘আমরা মানুষ হিসেবে বাঁচার সুযোগ পাচ্ছি।‘ পাঁচ সন্তানের মা সোফি। আর্থিক চাপের কারণে গর্ভাবস্থাতেও কাজ চালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছিলেন তিনি। এছাড়া মানবাধিকার কর্মীরা এই আইনকে যুগান্তকারী হিসেবে বর্ণনা দিয়েছেন। হিউম্যান রাইটস ওয়াচের এরিন কিলব্রাইড বলেন, ‘এটি একটি বৈপ্লবিক পদক্ষেপ। এটি যৌনকর্মীদের সুরক্ষায় এখনও পর্যন্ত বিশ্বের সেরা উদাহরণ।‘

অন্যদিকে, বেলজিয়ান ইউনিয়ন অব সেক্স ওয়ার্কার্সের সভাপতি ভিক্টোরিয়া এই আইনের গুরুত্ব ব্যাখ্যা করে বলেছেন, ‘যখন আপনার কাজ অবৈধ, তখন আপনাকে সুরক্ষার জন্য কোনও প্রোটোকল দেওয়া হয় না।‘ তিনি ব্যাখ্যা করেন, কাজের সময় তিনি অনেক অনিরাপদ অবস্থার মুখোমুখি হন। এবং গ্রাহকের দ্বারা ধর্ষণের শিকার হয়েছেন বলেও জানান তিনি। এই ঘটনায় পুলিশে অভিযোগ জানালে, এক অফিসার তাঁকে বলেন, ‘যৌনকর্মীদের ধর্ষণ করা যায় না।‘

এই আইনের সমালোচনা করেছেন অনেকেই। এনজিও ইসালার জুলিয়া ক্রুমিয়েরে বলেন, ‘যৌনকর্ম কোনও প্রাচীনতম পেশা নয়, এটি প্রাচীনতম শোষণ।‘ যদিও সমর্থকরা ‘যৌনকর্মী’ শব্দের পরিবর্তে ‘যৌনশিল্প’ শব্দ ব্যবহারের প্রস্তাবও দিয়েছেন।