দান করা জরায়ু থেকে প্রথম শিশুর জন্ম, যুক্তরাজ্যে যা প্রথম

অন্যের দান করা জরায়ু থেকে নবজাতকের জন্মদিয়েছেন এক মা। আর এ ঘটনা যুক্তরাজ্যে এবারই প্রথম। ওই নবজাতকের খালা তার মাকে জরায়ু দান করেছিলেন। মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) লন্ডনের কুইন শার্লটস অ্যান্ড চেলসিয়া হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ খবরটি নিশ্চিত করেছে। খবর বিবিসি

ওই শিশুটির মায়ের নাম গ্রেস ডেভিডসন। দুই বছর আগে তাকে তার বড় বোন জরায়ু দান করেছিলেন। এরপর গত ২৭ ফেব্রুয়ারি লন্ডনের কুইন শার্লটস অ্যান্ড চেলসিয়া হাসপাতালে অ্যামি নামের ওই মেয়েশিশুটির জন্ম হয়। নবজাতকের জন্ম দেয়া গ্রেস ডেভিডসন বলেন, ‘আমাদের এ যাবৎকালে চাওয়া সবচেয়ে বড় উপহারটি আমরা পেয়েছি।’ তিনি আশা করেন, ভবিষ্যতে সন্তান ধারণে অক্ষম নারীদের জন্য এটি একটি বিকল্প উপায় হয়ে উঠবে।

শিশুটির বাবা অ্যাঙ্গাস ডেভিডসন বার্তা সংস্থা প্রেস অ্যাসোসিয়েশনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘অ্যামিকে সত্যিকার অর্থে পাওয়ার এ যাত্রায় যারা আমাদের সাহায্য করেছেন, তাদের নিয়ে কক্ষটি পরিপূর্ণ হয়ে ছিল। ১০ বছর ধরে আমাদের আবেগ-অনুভূতি একরকম চাপা অবস্থায় ছিল। আর সেটার প্রকাশ কেমন হতে পারে, তা আপনার জানার কথা নয়। তা হাউমাউ কান্না হয়ে বের হয়ে এসেছে।’

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ৩৬ বছর বয়সী গ্রেস ডেভিডসনের জন্মের সময় রোকিটানস্কি-কাস্টার হাউসার নামে পরিচিত একটি বিরল শারীরিক জটিলতায় আক্রান্ত হয়। ফলে তার জরায়ুটি নিষ্ক্রিয় ছিল। গ্রেস যুক্তরাজ্যের প্রথম নারী, যার শরীরে জরায়ু প্রতিস্থাপন করা হয়েছে। তার ৪২ বছর বয়সী বোন অ্যামি পার্ডি তাকে জরায়ুটি দান করেছিলেন। অ্যামির ১০ এবং ৬ বছর বয়সী দুটি মেয়ে আছে। ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে অক্সফোর্ড ট্রান্সপ্লান্ট সেন্টারে জরায়ুটি প্রতিস্থাপন করা হয়েছিল। অক্সফোর্ড ট্রান্সপ্লান্ট সেন্টার অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি হসপিটালস ফাউন্ডেশনের অংশ। যুক্তরাজ্যে সুস্থ ও জীবিত অবস্থায় অঙ্গদান কর্মসূচির সহপ্রধান এবং স্ত্রীরোগবিষয়ক শল্য চিকিৎসক রিচার্ড স্মিথ বলেছেন, অ্যামির জন্মগ্রহণের ঘটনাটি ২৫ বছরের বেশি সময়ের গবেষণার চূড়ান্ত ফল। সুইডেনে ২০১৩ সালে জরায়ু প্রতিস্থাপনের কাজ শুরু হওয়ার পর থেকে বিশ্বজুড়ে ১০০টির বেশি জরায়ু প্রতিস্থাপন হয়েছে। এ পর্যন্ত বিশ্বে প্রতিস্থাপিত জরায়ু থেকে প্রায় ৫০টি সুস্থ শিশুর জন্ম হয়েছে।