ইমাম-মুয়াজ্জিন ও খাদেমরা পাবেন সম্মানী ভাতা, কে কত?

ইমাম, মুয়াজ্জিন ও খাদেমদের জন্য সুখবর। এখন থেকে দেশের প্রায় সাড়ে তিন লাখ মসজিদের ১৭ লাখ ইমাম-মুয়াজ্জিনকে সম্মানী ভাতা দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। তাদের পাশাপাশি মসজিদের খাদেমদেরও দেওয়া হবে এই ভাতা। নিয়মিত বেতন-ভাতার পাশাপাশি সরকারের সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী কর্মসূচির আওতায় তারা এ ভাতা পাবেন।

গুগল নিউজে ফলো করুন আরটিভি অনলাইন

জানা গেছে, প্রথম দফায় দেশের ১০ শতাংশ মসজিদে এ কর্মসূচি চালু করা হবে। পর্যায়ক্রমে বাকি মসজিদগুলোও এই কর্মসূচির আওতায় আনা হবে। প্রাথমিকভাবে ইমামকে দেওয়া হবে পাঁচ হাজার, মুয়াজ্জিন চার হাজার ও খাদেম পাবেন তিন হাজার টাকা। ইতোমধ্যে সারাদেশের মসজিদগুলোর তালিকা করতে গত মঙ্গলবার ইসলামিক ফাউন্ডেশন (ইফা) সাত সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছে। এতে ইফার সচিব মোহাম্মদ ইসমাইল হোসেনকে কমিটির প্রধান হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

কমিটির বাকি সদস্যরা হলেন- পরিচালক (সমন্বয়) মো. মহিউদ্দিন, পরিচালক (প্রকাশনা) মোহাম্মদ তৌহিদুল আনোয়ার, পরিচালক (ইমাম প্রশিক্ষণ একাডেমি) মো. রেজ্জাকুল হায়দার, মসজিদভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষা কার্যক্রমের উপপ্রকল্প পরিচালক (প্রশাসন) মো. জাকির হোসেন ও সহকারী পরিচালক (প্রশাসন) মো. মোস্তাফিজুর রহমান।

কমিটিতে সদস্যসচিবের দায়িত্ব পালন করবেন প্রশাসন বিভাগের উপপরিচালক (পার্সো) এ কে এম মুজাহিদুল ইসলাম। আগামী সাত কর্মদিবসের মধ্যে কমিটিকে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।

radhuni

কমিটি গঠনের অফিস আদেশে বলা হয়, মসজিদ ব্যবস্থাপনা নীতিমালা ২০০৬ যুগোপযোগী করা এবং গত বছরের জেলা প্রশাসক (ডিসি) সম্মেলনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর ইমাম, মুয়াজ্জিন ও খাদেমদের সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর আওতায় সরকার থেকে সম্মানী প্রদান করা হবে। এ পরিপ্রেক্ষিতে ইমাম, মুয়াজ্জিন ও খাদেমদের তালিকা তৈরি করতে এই কমিটি গঠন করা হলো।

এ বিষয়ে কমিটির প্রধান ও ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সচিব মোহাম্মদ ইসমাইল হোসেন গণমাধ্যমকে বলেন, সারাদেশে অন্তত সাড়ে তিন লাখ মসজিদ রয়েছে। এসব মসজিদে ১৭ লাখের বেশি ইমাম ও মুয়াজ্জিন রয়েছেন। এর বাইরে শহরের মসজিদগুলোতে খাদেম রয়েছেন। সরকার পরীক্ষামূলকভাবে প্রথম দফায় দেশের ১০ শতাংশ মসজিদে এ কর্মসূচি চালু করবে। পরে ধাপে ধাপে সব মসজিদের আওতায় আসবে।

তিনি আরও বলেন, কর্মসূচির আওতায় প্রতিটি মসজিদকে ১২ হাজার করে টাকা দেওয়া হবে। তা থেকে ইমাম পাঁচ হাজার, মুয়াজ্জিন চার হাজার এবং খাদেম তিন হাজার টাকা করে পারেন।

এদিকে একইভাবে মন্দিরের পুরোহিত ও অন্যান্য ধর্মীয় উপাসনালয়ের সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরাও এ ভাতার আওতায় আসবেন বলে ধর্ম মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে।

এর আগে, গত বছরের ৪ মার্চ জেলা প্রশাসক সম্মেলনের ধর্ম মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত কর্ম অধিবেশন শেষে মন্ত্রিপরিষদসচিব মাহবুব হোসেন বলেছিলেন, প্রতিটি জেলায় ইমাম, মুয়াজ্জিন, পুরোহিত ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে কর্মরত অন্যদের তালিকা প্রস্তুত করতে ডিসিদের নির্দেশ দিয়েছে। তাদের সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর আওতায় আনার সিদ্ধান্ত হয়েছে।

প্রসঙ্গত, দেশের ৬৪ জেলায় প্রায় সাড়ে তিন লাখ মসজিদ রয়েছে। এসব মসজিদে প্রায় ১৭ লাখ ইমাম-মুয়াজ্জিন কর্মরত। এরমধ্যে বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদ, আন্দরকিল্লা শাহি জামে মসজিদ এবং জমিয়াতুল ফালাহ মসজিদে তিনজন খতিব, ছয়জন পেশ ইমাম ও ছয়জন মুয়াজ্জিনের বেতন-ভাতা রাজস্ব খাতভুক্ত।